হৃদয়ের মাঝে দূরত্ব বৃ্দ্ধি
একজন টিচার তার ছাত্র- ছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষা সফরে গিয়েছিল। তারা যখন ঘুরতে বের হল তখন এমন একটা পরিবার দেখতে পেল যার সদস্যরা একে অপরের সাথে চিৎকার করে ঝগড়া করছিল। শিক্ষক তার ছাত্র- ছাত্রীদের দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন...
‘‘তোমাদের কি ধারনা? মানুষ যখন রেগে যায় তখন একে অপরের সাথে চিৎকার করে কথা বলে কেন?’’
শিক্ষার্থীরা কিছুক্ষন চুপ করে ভাবলো, তারপর একজন উত্তর দিল,'কারন আমরা তখন মনের শান্তি হারিয়ে ফেলি এবং চিৎকার করি।’’
শিক্ষক প্রশ্ন করলো,‘‘কিন্তু আমরা চিৎকারই বা করি কেন? যাকে আমরা রাগ দেখাই সে তো আমাদের সামনেই আছে, তাকে যা বলার তাতো আমরা শান্ত ভাবেও বলতে পারি।’’
ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই উত্তর দিল, কিন্তু তারা কেউই তাদের নিজেদের উত্তরেই সন্তুষ্ট হতে পারলো না। শেষে শিক্ষক তাদের ব্যাখ্যা করলো, ‘‘যখন দুইজন মানুষ একজন আরেক জনের সাথে রাগারাগি করে তখন তাদের হৃদয়ের মধ্যকার দূরত্ব বেড়ে যায়। এই দূরত্বের জন্য তারা চিৎকার করে কথা বলে, যাতে একে অপরের কথা বুঝতে পারে।
তারা যত বেশি রেগে যায় এই দূরত্ব তত বেশি বেড়ে যায়, আর তখন তারাও তত বেশি চেঁচামেচি করে ঝগড়া করে।’’ শিক্ষকের সাথে তার ছাত্র ছাত্রীদের সম্পর্ক ছিল খুব খোলামেলা, তাই সে ভালভাবে তাদের ব্যাপারটা বোঝাতে পারছিল।
‘‘কি ঘটে যখন দুইজন মানুষ একে অপরকে ভালবাসে? তারা কিন্তু নিজেদের সাথে চিৎকার করে কথা বলে না বরং মোলায়েম স্বরে কথা বলে। কারন তাদের ভালবাসা দুইজনের হৃদয়কে খুব কাছে নিয়ে আসে।''
শিক্ষক আবার বললো,‘‘ যখন দুইজন মানষের ভালবাসা আরও গভীর হয় তখন কি হয়? তখন তারা একে অপরের
সাথে চাপাস্বরে কথা বলেও সব কিছু বুঝতে পারে। এবং এক পর্যায়ে নিজেদের দিকে তাকিয়েই তারা সবকিছু বুঝতে পারে।’’
সে তার শিক্ষার্থীদের দিকে তাকালো এবং বললো, ‘‘তোমরা যখন একে অপরের সাথে তর্ক করো,ঝগড়া করো তখন এমন কোন শব্দ ব্যবহার কোরো না যা তোমাদের হৃদয়ের মাঝে দূরত্ব বৃ্দ্ধি করে। যদি এভাবে চলতেই থাকে তবে হয়তো এমন একদিন আসবে যখন এ দূরত্ব এত বেশি হয়ে যাবে যে আর কোন শব্দই সেখানে পৌছুবে না, সেখান থেকে ফিরে আসারও হয়তো আর কোন পথ থাকবে না।